হোমনা ( কুমিল্লা) প্রতিনিধি
হোমনা উপজেলার ঘারমোড়া ইউনিয়নের এক নিকাহ রেজিস্ট্রারের (কাজি) বিরুদ্ধে বাল্যবিয়ে নিবন্ধনসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন পার্শ্ববর্তী জয়পুর ইউনিয়নের কাজী মনির হোসেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ঘারমোড়া ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার নুরুল ইসলাম ঘারমোড়া ইউনিয়নসহ আশপাশের ইউনিয়ন, দুলালপুর, জয়পুর, ভাষানিয়া ইউনিয়নে যতগুলো বাল্যবিয়ে সংঘটিত হয়েছে তার বেশিরভাগ কাবিন রেজিস্ট্রি হয়েছে তার মাধ্যমে।
কাজী নুরুল ইসলাম বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে নকল রেজিস্ট্রার বই ব্যবহার করে বাল্যবিয়ে রেজিস্ট্রি করে। পরে কেউ কাবিননামা চাইলে কাবিননামা দিতে অস্বীকার করে। এছাড়া রেজিস্ট্রারের বিভিন্ন জায়গায় বর ও কনের জন্মের তারিখ লিপিবদ্ধ করা হয় না। এমনকি বিবাহ পড়ানো ব্যক্তি, সাক্ষী, কনে ও কাজির সইও থাকে না। বেআইনি প্রক্রিয়ায় অবৈধভাবে অর্থ আদায়ের জন্য এসব অভিনব কৌশল অবলম্বন করা হয়। কাজী নুরুল ইসলাম ঘারমোড়া ইউনিয়নের কাজী হলেও ২০ জুলাই ২০২০ তারিখে জয়পুর ইউনিয়নে অনন্তপুর গ্রামের ফারিয়া আক্তার মৌসুমীর বিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। ওই সময় যার বয়স ১৩ বছর। এছাড়া একই ইউনিয়নের পূর্বকাশিপুরের মাহমুদা আক্তার ও পিরোজপুরের তানিয়া আক্তারের কাবিন রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। তখন তাদের বয়স ছিল যথাক্রমে ১৭ বছর ৭ মাস ও ১৬ বছর ১৫ দিন। এসব ঘটনা উল্লেখ করে ১২ ডিসেম্বর ২০২২-তে অভিযোগ করা হয়। পরে উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার ও উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করলেও রহস্যজনক কারণে নিকাহ রেজিস্ট্রার নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এসব বিষয়ে নিকাহ রেজিস্ট্রার নুরুল ইসলাম বলেন, কনে পক্ষ যে জন্মনিবন্ধন দিয়েছিল তা অনলাইনে পাওয়া যায়নি তাই তাদের নোটিশ করে জানিয়ে দিয়েছি। বিবাহ রেজিস্ট্রি বাতিল। ‘বরকনে যে স্বামী-স্ত্রী হিসাবে ঘর-সংসার করছে তা আইনগত বৈধ কিনা?’ এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে রাজি হননি তিনি। এ বিষয়ে উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার সাকিম মজুমদার বলেন, ইউএনও স্যারের নির্দেশে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেছি।
এ ব্যাপারে ইউএনও বলেন, অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছি তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হবে।