হোমনা( কুমিল্লা) প্রতিনিধি
কুমিল্লার হোমনায় বে-সরকারি সংস্থা (এনজিও) / ব্যক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন গ্রামে চলছে বাড়ির হোল্ডিং এ্যাসেসমেন্ট ও হোল্ডিং নাম্বার প্লেট প্রদানের কাজ। এতে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ ও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
জানাগেছে, উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে বিগত ৩-৪ বছর পূর্বে একটি এনজিওর মাধ্যমে প্রতিটি বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স এ্যাসেসমেন্ট ও হোল্ডিং নম্বার প্লেট প্রদানের কাজ করা হয়েছিল। তখন হোল্ডিং নাম্বার সম্বলিত একটি করে প্লেট দেয়ার কথা বলে জনগণের কাছ থেকে ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা করে নেয়া হয়েছিল।
আবার নতুন করে উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন পরিষদে বাড়ির হোল্ডিং এ্যাসেসমেন্ট ও হোল্ডিং নাম্বার প্লেট প্রদানের কাজ পৌর পল্লী নামক একটি বে-সরকারি সংস্থার (এনজিও) মাধ্যমে করা হচ্ছে। এতে ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ১ নং মাথাভাঙ্গা ও ৭ নং ভাষানিয়া ইউনিয়নের কাজ শেষ হয়েছে। এতে প্রতি হোল্ডিং প্লেটের জন্য ১৫০ টাকা করে নেয়া হয়েছে। তবে জনগনের অভিযোগ বাড়ির পুরাতন হোল্ডিং নম্বর থাকার পরও নতুন করে হোর্ডিং নম্বর নিতে তাকে আবার ১৫০ টাকা করে দিতে হয়েছে।
ঘাগুটিয়া,দুলালপুর, চান্দেরচর,আছাদপুর, নিলখী ইউনিয়নে কাজ চলমান আছে। বাকি দুই ইউনিয়ন ঘারমোড়া ও জয়পুর স্থানীয় ভাবে এ কাজ করবে বলে জানাগেছে।
এদিকে মাথাভাঙ্গা ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড বিজয় নগর গ্রামের মো. মো.আসাদ মিয়া জানান,আমার পূর্বের চেয়ারম্যানের সময় হোল্ডিং নম্বর ছিল ১৮৩ তখন নেয়া হয়েছিল ১৫০ টাকা, এরপর নেয়া হয়ছিল ২০০ টাকা বর্তমানে নতুন হোর্ডিং নম্বর দিয়েছে ১৬৭ এর জন্য নিয়েছে ১৫০ টাকা। কয়েক বছর পর পর হোর্ডিং নম্বরের নাম করে লাখ লাখ টাকা আদায় করা হচ্ছে। হিসাব মতে ৪ হাজার হোর্ডিং নম্বরের জন্য বানিজ্য হয়েছে-২০ লক্ষ টাকা।
সরেজমিনে গেলে কোন বাড়িতে হোর্ল্ডিং প্লেট স্থাপনের নজির পাওয়া যায়নি। এমনকি বাড়ির মালিক তাদের বাড়ির হোল্ডিং নম্বর বলতে পারে না। তবে না পারলেও ইউনিয়ন পরিষদ অফিসের রেজিষ্টারে হোল্ডিং নম্বর পাওয়া যায়। কেহ জন্মনিবন্ধন ও জাতীয়তার সনদ নিতে গেলে তাকে বাধ্যতামূলক ভাবে বাড়ির ট্যাক্স পরিশোধ করতে হয়।
জানাগেছে, বিগত ২০১৬ সালে উপজেলার প্রত্যেক ইউনিয়নে প্রতিটি বাড়ির আর্থ-সামাজিক অবস্থান জরিপ, নিজস্ব ওয়েব সাইটে অন্তুর্ভূক্ত, হোল্ডিং ট্যাক্স এসেসমেন্ট ও ডিজিটাল হোল্ডিং নাম্বার প্লেট স্থাপনের কার্যক্রম শুরু করা হয়। সে সময় কিছু বে-সরকারী সংস্থা ( এনজিও)কে এ কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে, ডিজিটাল হোল্ডিং নাম্বার প্লেট স্থাপন প্রসঙ্গে এক পত্রে “স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ এ কোন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে হোল্ডিং এ্যাসেসম্যান্ট ও নাম্বার প্লেট প্রদানের কোন সুযোগ নেই।” উল্লেখ করে পত্র প্রেরণ করা হয়েছিল।
এ ব্যাপারে বে সরকারী সংস্থা পৌর পল্লীর ম্যানেজার মো. ফেরদৌস হোসেন মুঠোফোনে জানান, ইউনিয়ন পরিষদ সচিব বা চেয়ারম্যানের মাধ্যমে চুক্তিকরে ইউনিয়ে আমরা এ কাজ করছি।এতে নম্বর প্লেট দিয়ে ১০০ টাকা নিচ্ছি। ৫০ টাকা নেয় ইউনিয়ন পরিষদ।
এ বিষয়ে মাথাভাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা জানান, নতুন করে এ্যাসেসমেন্ট করায় হোল্ডিং নম্বর পরিবর্তন হয়েছে।
এ দিকে হোমনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার( ইউএনও) রুমন দে চিকিৎসার সার্থে বিদেশ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে অফিস সূত্রে জানাগেছে,প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কোন বে-সরকারি প্রতিষ্ঠানকে (এনজিও) দিয়ে হোল্ডিং এ্যাসেসমেন্ট ও নাম্বার প্লেট প্রদান না করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।