![](https://darpannews24.com/wp-content/uploads/2023/08/20230827_100735-1024x576.jpg)
দর্পণ ডেস্ক রিপোর্টঃ
কুমিল্লার হোমনা উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্র উপজেলা নির্বাহী অফিস, ভূমি অফিস ও হোমনা প্রেস ক্লাব সংলগ্নে অবস্থিত হোমনা সদরের বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান “সায়েন্স বিডি”।
সায়েন্স বিডির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ইঞ্জিঃ রিয়াজুল হক এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ইন্সট্রাক্টর মো. সাইদুল ইসলামের নেতৃত্বে ৬ জন দক্ষ প্রশিক্ষক দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে এ প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে বিভিন্ন কোর্সে প্রশিক্ষনার্থী রয়েছে প্রায় ৮০ জন।
২৫ আগষ্ট শনিবার সায়েন্স বিডি’র প্রশিক্ষণার্থীদের নিয়ে ২টি ট্রলার যোগে নৌ পথে আনন্দ ভ্রমণের আয়োজন করেন সায়েন্স বিডি। এতে শতাধিক প্রশিক্ষনার্থী ও অভিভাবক অংশগ্রহন করেন। সকাল ০৮ টায় হোমনা লঞ্চঘাটে দোয়া মোনাজাতের পর নুনের টেক, মায়াদীপ ও সোনার গাঁও এর উদ্দেশ্যে নৌ- ভ্রমণে রওনা হয়। সায়েন্স বিডির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ইঞ্জিঃ মোঃ রিয়াজুল হক ও অতিথি হিসাবে হোমনা প্রেস ক্লাবের যুগ্ন সম্পাদব সাংবাদিক মোঃ আবুল কাশেম ভুইয়া ও নৌ ভ্রমনে অংশগ্রহন করেন। এ সময় মোনাজাত পরিচালনা করেন প্রতিষ্ঠানের ইন্সট্রাক্টর সাংবাদিক মোঃ তারিকুল ইসলাম।
হোমনা লঞ্জঘাট থেকে রওয়ানা হয়।এর পর লটিয়া ঘাট থেকে আরো কিছু প্রশিক্ষনার্থী ট্রলারে উঠে তখন থেকেই হালকা রিমঝিপ বৃষ্টি পড়ছে। রিম ঝিম বৃষ্টিময় আবহাওয়ার মধ্যে নুনের টেক/মায়াদীপে পৌঁছে ট্রলার। এ সময় বাবুর্চিও গরম ভূনা খিচুড়ির পাতিল নিয়ে উপস্থিত। প্রথমে সকালের নাস্তা সেরে ফেলে ট্রলারের মধ্যে। পরে মায়াদ্বীপে নেমে
প্রাকৃতিক পরিবেশ পেয়ে খুবই আনন্দিত হয়েছে সবাই।
![](https://darpannews24.com/wp-content/uploads/2023/08/20230827_100638-1024x576.jpg)
মায়াদ্বীপটি মেঘনা নদীর পাড়ে হোমনা উপজেলার সীমান্তে নারায়নগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলায় অবস্থিত মধ্যে। এ দ্বীপে গেলে কক্সবাজারের পরিবেশ উপলব্ধি করা যায়। তাই এ দ্বীপকে মিনি কক্সবাজার ও বলা যেতে পারে সব মিলিয়ে খুবই চমৎকার ছিল পরিবেশটা।
ছেলে প্রশিক্ষনার্থীরা দুটি দলে ভাগ হয়ে ফুটবল খেলার আনন্দে মেতে উঠে।পাশা পাশি অনুষ্ঠিত হয় মেয়ে প্রশিক্ষণার্থীদের বালিশ খেলা পাশাপাশি রান্নার কাজও চলছিল সমান তালে।
খেলা শেষে ছেলেরা মেঘনার টলমলে পানিতে বেশ আনন্দের সাথে অনেক সময় ধরে বৃষ্টিস্নান সহ ফটোসেশনে মেতে উঠে।
পরে জুমার নামাজ আদায় করে সকলে একসাথে দুপুরের খাবার খেয়ে নেন, ঠিক তখনই শুরু হয় মসলধারে বৃষ্টি। এ বৃষ্টির মধ্যেই ট্রলার ছেড়ে দেয় ঐতিহ্যবাহী সোনার গাঁও এর উদ্দ্যেশ্যে । সেখানে সোনার গাও জাদুঘর, পানাম নগরি সহ বিভিন্ন স্থাপনা দর্শন করে আনন্দ উপভোগ করেন প্রশিক্ষনার্থী ও তার অভিভাবক।
জানাগেছে,২০০৬ সালে ওয়ার্ল্ড মনুমেন্ট ফান্ড নামক একট গবেষনা সংস্থা বিশ্বের ধ্বংসপ্রায় ১০০টি ঐতিহাসিক নগরের তালিকা প্রকাশ করেছে। সেই তালিকায় পানাম নগরির নাম রয়েছে। পানাম নগরীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন স্থাপনা। এক সময় পানাম নগরী ছিল মসলিন কাপড়ের জমজমাট বাজার।
বাংলার ১২ ভূইয়াদের সময় ইশা খাঁর রাজধানী ছিলেন এ পানাম নগরীতে।
ঐতিহাসিক ভাবে পানাম নগরী ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বানিজ্যিক শহর।
পানাম নগরীর দুই পাশে মোট ৫২টি স্থাপনা আছে। এর উত্তরদিকে ৩১টি ও দক্ষিণদিকে ২১টি স্থাপনা অবস্থিত। স্থাপনা গুলোর দেখলেই মোঘল শিল্পের কারুকার্য লক্ষ্য করা যায়। এতে পানি সরবরাহের জন্য দু’পাশে খাল ও পুকুর আছে। এখানে আবাসিক ভবন ছাড়াও উপাসনালয়, গোসলখানা, পান্থশালা, দরবার কক্ষ ইত্যাদি আছে।
এ ছাড়া সোনার গাওঁ এ আরো কিছু স্থাপনা আছে যেমন- যাদুঘর, গরুর গাড়ি, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, ছোট সর্দার বাড়ি, ঈশা খাঁর তোরণ, নীলকুঠি, বণিক বসতি, ঠাকুর বাড়ি ইত্যাদি।
![](https://darpannews24.com/wp-content/uploads/2023/08/20230827_100735-1-1024x576.jpg)
বিকেলে হোমনার উদ্দ্যেশ্যে ট্রলার ছেড়ে দেয়। পথিমধ্যে কিছুক্ষণ পর পর বৃষ্টির মূহূর্তগুলো ভ্রমনকে আরো আনন্দ ময় করে তোলে। এতে দারুন অভিজ্ঞতা এনে দেয় সবাই কে। এ সময় সাংবাদিক কাশেম ভুইয়ার খালি গলায় কিছু চমৎকার গান খুবই মনমোগ্ধকর ছিল। সন্ধ্যায় সবাই অতৃপ্ত ভাষনা ও আনন্দঘন অভিজ্ঞতা নিয়ে হোমনায় ফিরে আসে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অভিভাবক জানান,
দিন শেষে ভ্রমণটি ছিল আনন্দঘন প্রাণবন্ত এবং নানা অভিজ্ঞতাসহ জ্ঞান অর্জনের। এমন সুন্দর আনন্দ নৌ ভ্রমণের আয়োজনের জন্য সায়েন্স বিডি’র কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
এতে সকল প্রশিক্ষনার্থী ও অভিভাবক মহা খুশি ও আনন্দিত।