মো.আব্দুল হক সরকার
কুমিল্লার হোমনায় তীব্র গরম ও অতিরিক্ত লোডশেডিংএ জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। হোমনা উপজেলায় কয়েকটি ফিডারে ভাগ করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছে কুমিল্লা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি -৩। এতে উপজেলা সদর ফিডারে কিছু সময় বেশী বিদ্যুৎ থাকলেও, অন্যান্য ফিডারে (এলাকায়) বিদ্যুৎ সরবরাহ অনেক কম থাকছে। এতে বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে পক্ষ পাতিত্বের অভিযোগ করছে অন্যান্য ফিডারের গ্রাহকগণ।
তাদের অভিযোগ উপজেলার সদর ফিডারে কিছু সময় বেশী বিদ্যুৎ থাকলেও প্রত্যন্ত গ্রামে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে। বাকি সময়ে প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস করছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জনগন।
প্রচন্ড গরম ও লোডশেডিং এর মাঝে বিদ্যুৎ বিল ও বেশী আসার অভিযোগ রয়েছে অনেক গ্রাহকের।
হোমনা ২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হুমায়ুন কবীর জানান,
গত মাসের তুলনায় এ মাসে বিদ্যুৎ বিল বেশী আসছে। গত মাসে বিদ্যুৎের যে ইউনিট চালিয়েছি। ে মাসেও তাই চালিয়েছি। তা হলে গতমাসে বিল ছিল১২০০/- কিন্ত এ মাসে আসছে ২৭০০/- টাকা। এতে তাদের ভাষায়” মরার উপর খারার গা ” কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ দিলে মিটার রিডিং দেখে বিল করেছে বলে পাশ কাটিয়ে যায়। এতে গ্রাহকগণ আর্থিক ভাবেও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
অফিস সূত্রে জানাগেছে, চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ জেনারেশন কম থাকায় এই লোডশেডিং হচ্ছে। তাদের কিছুই করার নাই।
নয়াকান্দি গ্রামের মো.আলাউদ্দিন জানান, গরমে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে গেলাম। দিনের বেলায় যেমন তেমন, রাতের বেশিরভাগ সময়ে তো বিদ্যুৎ থাকেই না। এখন এমন অবস্থা যে, বিদ্যুৎ থাকা না থাকা সমান কথা।
রাতে অন্তত চার-পাঁচবার বিদ্যুৎ যায়। শুনেছি, উপজেলা সদর এলাকায় বিদ্যুতের তেমন কোনো সমস্যা নেই।
রামকৃষ্ণপুর বাজারের ব্যবসায়ি মো. ইসমাইল বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। গরমে শিশু-বৃদ্ধরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বিদ্যুৎ না থাকায় নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় অনেকের।
বাগমারা গ্রামের মো. সফিকুল ইসলাম জানান গতকাল রাত ৩টার সময় বিদ্যুৎ গেছে, সকাল ৮টায়ও আসেনি। অফিসের ইচ্ছেমত বিদ্যুৎ দেয়, আবার অফ করে। শুনেছি, উপজেলা সদরে নাকি বেশিরভাগ সময় বিদ্যুৎ থাকে।
বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক না থাকায় শুধু যে মানুষের কষ্ট হচ্ছে, তা নয়। ব্যবসা বাণিজ্যেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
উপজেলা সদরের হোটেল ব্যবসায়ী আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন, একে তো গরম এরপরে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না থাকায়, ব্যবসার অবস্থাও খুব খারাপ।
এ বিষয়ে উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার( ডিজিএম) শতকাতুল আলম চৌধুরী জানান, উপজেলার জন্য ১৮ মেগাওর্য়াট বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে আমরা ৪ থেকে ৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বরাদ্দ পাই। যার কারণে লোডশেডিং হয়ে থাকে। এছাড়া হোমনা সদর এলাকায় কম লোডশেডিং এবং প্রত্যন্ত এলাকায় বেশি লোডশেডিংয়ের বিষয়ে বলেন, সদরকে একটু গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর জেনারেল ম্যানেজার ইঞ্জিঃ মুহাম্মদ নুরুল হোসাইন বলেন, প্রচণ্ড তাবদাহে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে চাহিদা বেশ বেড়ে গেছে। এছাড়া চাহিদার সংকুলান না হওয়ায়, জাতীয় গ্রিড থেকেও মাঝে মধ্যে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে । আবহাওয়া কিছুটা শীতল হলে লোডশেডিংয়ের মাত্রাও কমে যাবে বলে জানান তিনি।