দর্পণ ডেস্ক রিপোর্ট।
শিক্ষকের শেষ কর্মদিবসে ব্যতিক্রম ধর্মী আয়োজনের মাধ্যমে বিদায় জানিয়েছেন তাঁর সহকর্মী ও শিক্ষার্থীরা। তাঁকে বিদায় জানাতে আনা হল একটি অটোরিক্সা। এটা ফুল দিয়ে সুসজ্জিত করা হলো।কেন না এই অটোরিকশায় চড়বেন একজন বিদায়ী শিক্ষক। যিনি দীর্ঘ ৩৯ বছর ধরে নিজেকে উজার করে এই অঞ্চলে শিক্ষার আলো বিলিয়েছেন। তাঁর শেষ কর্মদিবসে শিক্ষাগুরুর প্রতি আকুণ্ঠ শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা প্রদর্শনের জন্য এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁর সহকর্মী শিক্ষক ও বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী।
কুমিল্লার জেলার তিতাস উপজেলার ইসলামাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটেছে এ ঘটনা। যার জন্য এ আয়োজন তিনি হলেন ইসলামাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সামসুন্নাহার।
জানাগেছে, বৃহস্পতিবার(২৪ আগস্ট) ছিল তাঁর কর্ম জীবনের শেষ দিন। তাই তাঁর কর্মজীবনের শেষ দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে ওই দিন দুপুরে বিদ্যালয় মিলনায়তনে এক সংবর্ধনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন অত্র বিদ্যালয়ের , ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও আনন্দ মাল্টিমিডিয়া স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ সেলিম সরকার।
ইসলামাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হোসনেয়ারা বেগম এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন প্রভাষক ও সাংবাদিক হালিম সৈকত, আনন্দ মাল্টিমিডিয়া স্কুলের সহকারি শিক্ষক মোঃ শাহজাহান মুন্সি, বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মোঃ মোস্তফা , মোঃ হযরত আলী , আঃ আউয়াল , মোঃ মাসুম বিল্লাহ, বাঘাইরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মোঃ আবুল হোসেন, রেডিয়ান্ট ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সহকারী শিক্ষক মোঃ সবুজ আহমেদ, মোঃ সাঈম আহমেদ ও আবু মুছা জুয়েল ও বিদায়ী শিক্ষক শামসুন্নাহার প্রমূখ।
বিদায়ী শিক্ষক সামসুন্নাহার বক্তব্য দিতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। এই সময় তিনি বলেন, ৩৯ বছর চাকুরি করেছি। শিক্ষার্থীদের সবসময় পড়াশুনার প্রতি উদ্বৃুদ্ধ করার চেষ্ঠা করেছি, অনেককে শাসন করতে হয়েছে। জীবনে চলার পথে আমার কর্মময় জীবনে কোন ভুলক্রুটি করে থাকলে সবার কাছ ক্ষমা প্রার্থনা করছি। বাকি জীবন পরিবার-পরিজন নিয়ে যেন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে অতিবাহিত করতে পারি সেই জন্য সবার নিকট দোয়া কামনা করছি। আমার চাকরি জীবনের শেষ দিনটি এমন সুন্দর আয়োজনের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হবে তা কল্পনাও করিনি। এটা আমার জীবনে সবচেয়ে বড় পাওয়া।
পরে পুস্প পল্লবে সুসজ্জিত অটোরিকশায় বসিয়ে তাঁকে তাঁর বাড়িতে পৌছে দেওয়া হয়। এ সময় এক হৃদয় বিধারক দৃশ্যের অবতারনা হয়। শিক্ষক শিক্ষর্থীরা তাঁকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তাঁদের এ দৃশ্য দেখতে গ্রামের উৎসুক লোকজন বিদ্যালয়ে ভীর জমান।
( তথ্য হালিম সৈকত)