হোমনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
কুমিল্লার হোমনায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক তিতাস নদী সহ চারটি খাল খনন কাজের প্রথম থেকেই অনিয়মসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। পাউবো কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজসে তিতাস নদী খনের বালু বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা বানিজ্য করা হয়েছে। ফলে মেয়াদ শেষ হলেও বালু বিক্রির উদ্দেশ্যে খনন কাজ অব্যহত রাখে।
এ ছাড়া উপজেলায় চারটি খাল খননের ক্ষেত্রে ও ব্যাপক অনিয়ম করছে ঠিকাদার। খালের কিছু অংশ ড্রেজার দিয়ে কিছু অংশ ভ্যাকু দিয়ে খনন করার কথা রয়েছে। কিন্ত ড্রেজার দিয়ে খননকৃত বালু উত্তোলন করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে তা অন্যত্র বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছি লাখ লাখ টাকা । আর কিছু অংশ এসকেবেটর( ভ্যাকু) দিয়ে নাম কাওয়াস্তে খাল খনন করা হচ্ছে। এদিকে খালের পাড়ে থাকা বাড়ি বা স্থাপনা রক্ষার নামে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন অংকের টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।
কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) অফিস সূত্রে জানা যায়, চারটি খালের মধ্যে তেভাগিয়া খাল ২ কোটি ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬. ৫৫ কিলোমিটার খাল খননের কাজ পায় মেসার্স ইব্রাহিম ট্রেডার্স। কিন্ত ঠিকাদার টেন্ডারের শর্ত মোতাবেক কাজ না করে একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চার থেকে পাঁচ ফুট পানির মধ্যে এসকেবেটর (ভেকু) মেশিন দিয়ে খাল খনন কাজ শুরু করে। এতে কোন কোন স্থানে খনন করা হচ্ছে আবার কোন কোন স্থানে খনন করা হচ্ছে না। ফলে কী পরিমাণ খাল খনন করা হচ্ছে তা দেখার কোন সুযোগ নাই। এনিয়ে জনগনের মাঝে ধুম্রজাল তৈরী হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায় তেভাগিয়া খালের কোন কোন স্থানে কাদা মাটি তুলে বাড়ির পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলা হয়েছে। যা বর্ষা মৌসুমে মাটি আবারও খালে পড়ে ভরাট হয়ে যাবে। কিন্ত এর জন্য বাড়ির মালিকের কাছ থেকে ২ থেকে ৫ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে।
এলাকাবাসি জানান, ঠিকাদার নামকাওয়াস্তে খাল খনন করছে আবার কোন কোন স্থানে করছে না। এতে যে উদ্দেশ্যে খাল খনন করা হচ্ছে তা কোন কাজে আসবে না। যে পরিমাণ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে তার এক-চতুর্থাংশ টাকাও খরচ হবে না।
তেভাগিয়া গ্রামের মো. বসির জানান, ঠিকাদার খাল পাড়ের পরিবার গুলোকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আমি এর প্রতিবাদ করায় আমার বাড়ির সাইডের মাটি কেটে নেয়া হয়েছে। এতে বর্ষামৌসুমে আমার বাড়ি খালে বিলীন হয়ে যাবে। এ বিষয়ে পাউবো কর্মকর্তা রাকিব সাহেবকে জানালে তিনিও ঠিকাদারের ভাষায় কথা বলে আমার কথার কোন গুরুত্ব দিচ্ছে না।
এদিকে ঠিকাদারের প্রতিনিধি কমল মুঠোফোনে বলেন, আমি কোনো সিন্ডিকেট করিনি স্থানীয় ইউপি সদস্য সিব্বির হোসেন আমাকে সহযোগীতা করেন। খাল পাড়ের বাড়ির মালিকের কাছ থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগ সত্য না। আমার নাম করে হয়তো কেহ নিতে পারেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও মো. রাকিব মুঠোফোনে যুগান্তরকে বলেন, সঠিক নিয়মে কাজ হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করাই আমার দ্বায়িত্ব। খাল পাড়ের মানুষের কাছ থেকে টাকা নেয়ার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে ড্রজারের মাধ্যমে খনন কৃত বালু বিক্রি করা হচ্ছে এমন প্রশ্ন তিনি এরিয়ে যান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ক্ষেমালিকা চাকমা জানান,এ ধরনের লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।