হোমনা( কুমিল্লা) প্রতিনিধি
অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে বদলী হওয়া কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলা চান্দেরচর ইউনিয়নের সহকারি ভূমি কর্মকর্তা মো. আমান উল্লাহকে আগের কর্মস্থলে বদলী করা হয়েছে।
জানাযায় দুর্নীতির অভিযোগে মো. আমান উল্লাহ ‘র বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশের প্রেক্ষিতে জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার বিপুলসার ইউনিয়নে বদলি করা হয়েছিল। কিন্ত তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার পরিবর্তে রহস্যজনক কারনে তাকে পূর্বের কর্মস্থলে বদলীর আদেশদেন কর্তৃপক্ষ।
কুমিল্লা জেলার রেভিনিও ডেপুটি কালেক্টর মো. মইন উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ আদেশ দেয়া হয়। স্মারক নং-১১০৯, তারিখ ১৮/১২/২০২৪ খ্রি.
এদিকে দুর্নীতির দায়ে বদলী হওয়া কর্মকর্তাকে পূর্বের কর্মস্থলে পুনরায় বদলী করার ঘটনাকে নজিরবিহীন উল্লেখ করে জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে।কোন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে পুনরায় পূর্বের স্থানে বদলী করা মানে তার বিরুদ্ধে আনীত দুর্নীতির অভিযোগকে মিথ্যা প্রমান করা। এতে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা আরো উৎসাহিত হবে বলে এলাকার সচেতন মহল মনে করেন।
জানাযায়, ২০ মার্চ২০২৪ খ্রি. তারিখে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক চান্দেরচর ইউনিয়ন সহকারি ভূমি কর্মকর্তা( নায়েব) মো. আমান উল্লাহর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে হোমনা উপজেলা সহকারী কমিশনার( ভূমি) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। সে প্রেক্ষিতে তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক( রাজস্ব) বরাবর সুপারিশ করেন। পরবর্তীতে ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা মো. আমান উল্লাহ কে মনোহরগঞ্জ উপজেলার বিপুলসার ইউনিয়নে বদলী করা হয় ।
সরেজমিনে গেলে চান্দেরচর ইউনিয়নের ভূমি অফিসে আগত সেবা প্রত্যাশিদের সাথে আলোচনা করে জানাযায় চান্দেরচর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. আমান উল্লাহ’র শশুর বাড়ি হোমনা উপজেলার শ্রীমদ্দি গ্রামে হওয়ায় স্থানীয় প্রভাব খাঁটিয়ে জমির খাজনা বাবদ অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ, টাকার বিনিময়ে এক জনের জমি আরেক জনের নামে জমা খারিজ করা, সরকারী রাজস্ব আত্মসাতসহ নানা অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগ রয়েছেন তার বিরুদ্ধে। নানা অনিয়ম দূর্নীতির মাধ্যমে তিনি অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। রাতারাতি হয়েছেন আঙুল ফুঁলে কলাগাছ।
তিনি সরকারি আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নানা অপকর্ম করে চান্দেরচর ইউনিয়ন ভূমি অফিসকে বানিয়েছিলেন অপরাধের স্বর্গরাজ্য। তার ছিল একটি শক্তিশালী দালাল চক্র ও গুণ্ডা বাহিনী। যাদের নিয়ন্ত্রণ ও দেখভাল করতেন তিনি নিজেই।
এ বিষয়ে হোমনা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আহাম্মেদ মোফাচ্ছের বলেন, আমি পরে যোগদান করেছি। তবে এ বিষয়ে তদন্ত করে সুপারিশ সহ প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ক্ষেমালিকা চাকমা জানান, চান্দেরচর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. আমান উল্লাহ’র বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। তাকে অন্যত্র বদলীও করা হয়েছে। তাকে পূর্বের কর্মস্থলে বদলী করার বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি এডিসি( রাজস্ব) স্যারের সাথে কথা বলবো।
এ দিকে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার মুঠোফোনে যুগান্তরকে জানান,বদলীর সাথে বিভাগীয় ব্যবস্থার কোন সম্পর্ক নেই। তার শুশুর বাড়ির ঠিকানা তো চিঠিতে লিখা নাই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।