নিজস্ব প্রতিবেদক।।
আগামী ১৭ অক্টোবর কুমিল্লা জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত নির্বাচনে চার জন প্রার্থী সদস্য পদে মনোনয়ন পত্র জমা দিলেও দুইজন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করায় দুইজন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। তারা হলেন তালা প্রতীকের উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কাউসার আহাম্মেদ বেপারী ও হাতি প্রতীকের মো. মকবুল হোসেন পাঠান। প্রতীক পাওয়ায় পরপরই উভয় প্রার্থী আনুষ্ঠানিক প্রচারনা শুরু করেছেন।
হোমনা উপজেলা পরিষদ, ১ টি পৌর সভা ও ৯টি ইউনিয়ন নিয়ে ৪ নং ওয়ার্ড গঠিত। এর মোট ভোটার সংখ্যা ১৩৩ জন। তবে মাথাভাঙ্গা ইউনিয়নের আল আমিন নামের একজন মেম্বারের মৃত্যুজনিত কারনে ১টি ভোটার কম হবে এতে মোট ভোটার সংখ্যা -১৩২ টি।এ ছাড়া আছাদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন পাঠান জেল হাজতে এবং চান্দেরচর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড মেম্বার হেলাল উদ্দিন বিদেশে আছেন। ১৭ অক্টোবরের মধ্যে চেয়ারম্যান জেল থেকে মুক্ত না হলে এবং হেলাল উদ্দিন মেম্বার দেশে না আসলে আরো দুইটি ভোট কমে যাবে। তখন মোট ভোটার সংখ্যা দাড়াবে ১৩০টি।
অনুসন্ধ্যানে জানাগেছে, একজন প্রার্থী বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে দুইজন প্রার্থীকে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করিয়েছেন যাতে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্ধীতায় নির্বাচিত হতে পারেন। কিন্ত একজন প্রার্থী তার মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার না করায় তার সেই পরিকল্পনা বেস্তে যায়।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান ও মেম্বার দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এবার নির্বাচনে দুই প্রার্থীই শক্ত অবস্থানে রয়েছে। একপ্রার্থীর রয়েছে সাংগঠনিক শক্তি অপরপ্রার্থীর রয়েছে অর্থের প্রভাব। ফলে নির্বাচনে হাড্ডা হাড্ডি লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা। ইতোমধ্যে প্রার্থীরা ভোটারদের সাথে বিভিন্ন ভাবে যোগাযোগ করে বড় অঙ্কের টাকার অফার দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে ভোটারদের কাছে খরচ বাবদ কিছু টাকা পৌঁছানো শুরু হয়েছে।
নামপ্রকাশ না করার শর্তে এক ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, চার জনের মধ্যে তিনজনই যদি মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করতো তালে নির্বাচন হতো না, ভোটাররাও মূল্যায়ন পাইতো না। এ ক্ষেত্রে যে নিজে লাভবান না হয়ে ভোটারদের লাভবান করেছেন তার প্রতি ভোটারদের সহানুভূতি থাকাটা স্বাভাবিক। অপর পক্ষে যে টাকা দিয়ে প্রার্থীকে বসানোর পরিকল্পনা ছিল সেই টাকা ভোটারদের মাঝে বন্টন করা হলে টাকার বিনিময়ে অনেক ভোট পেতে পারেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জানাগেছে, স্থানীয় সরকার ( ইউনিয়ন পরিষদ) নির্বাচনে লাখ লাখ টাকা খরচ করে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। শুধুমাত্র ইউপি সদস্য পদে ভোট করতেই ৫ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হয়েছে। চেয়ারম্যানের কথা বলাই বাহল্য দলীয় মনোনয়ন পেতে খরচ করতে হয় বড় অঙ্কের টাকা। এসব জনপ্রতিনিধিরা জেলা পরিষদ নির্বাচনে টাকার জন্য অপেক্ষা করাটা অস্বাভাবিক নয়।
এদিকে রিটার্নিং অফিস সূত্রে জানাগেছে, জেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা ২০১৬ অনুযায়ী চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরা সর্বোচ্চ ৫ লাখ এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ও সদস্য পদের প্রার্থীরা সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবেন।
অথচ প্রতিটি নির্বাচনে প্রার্থীদের ব্যয়সীমা আইন ও বিধিমালা দ্বারা নির্দিষ্ট করা আছে। ব্যয়সীমা অতিক্রম করার সাজাও নির্ধারিত আছে। তবু নির্বাচনে টাকা খরচ করে ভোট কেনার প্রবণতা বেড়েই চলেছে। এভাবে টাকার বিনিময়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হলে নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাবে। বিপুল অর্থ খরচ করে নির্বাচিত হওয়া দুর্নীতিকে উসকে দিবে বলে মন্তব্য সচেতন মহলের।