হোমনা( কুমিল্লা) প্রতিনিধি
কুমিল্লার হোমনায় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক খাল খননের বালু বিক্রির অভিযোগ উঠেছে খনন কাজের ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।
২০২২-২৩ অর্থ বছরে হোমনা উপজেলায় ৬ টি খাল খনন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এর মধ্যে ২ কোটি ৭৩ লাখ ৭৬ হাজার ৮২০ টাকা ব্যয়ে বাগমারা থেকে রামপুর পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার খাল খনন কারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মিজানুল আলম( জেবি) । ৩০ ডিসেম্বর২০২৩ সালে এর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও অবৈধ ভাবে নক্সাও ডিজাইন বহিভূত ভাবে যেখানে বালু পাওয়া যায় সেখান থেকে গভীর করে খনন করে খননকৃত বালু পাইপ লাইনের মাধ্যম প্রতিঘনফুট বালু ৭ /৮ টাকা দরে স্থানীয়দের মাঝে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
এদিকে বালু ব্যবস্থাপনা আইনে খননে উত্তোলিত বালু স্তপ করে রেখে বালু ব্যবস্থাপনা কমিটির মাধ্যমে টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করার কথা থাকলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের যোগসাজসে স্থানীয় একটি বালু সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ঠিকাদার খননকৃত বালু বিক্রি করে দিচ্ছে। এতে বড় অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার অপর দিকে নষ্ট হচ্ছে অনেক কৃষি জমি। সিন্ডিকেট প্রভাবশালী হওয়ার কেহ প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না।
বাগমারা গ্রামের মো. কবির হোসেন জানান, অবৈধ বালু বিক্রির বিরুদ্ধে ফেইজ বুকে স্ট্যাটার্স দেয়ায় আমার মুঠোফোনে মো. সামসু মিয়া নামের এক ব্যক্তি আমাকে হুমকি দিয়ে অকথ্যভাষায় গালাগাল করেছে। তাই পোষ্টটি ডিলেট করতে বাধ্য হয়েছি।
সিন্ডিকেট সদস্য মো. সামসু মিয়া হুমকির কথা স্বীকার করে বলেন,সাবেক এমপির আমলে কবির হোসেন সহ কয়েক জন মিলে বালু বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা কামাই করেছে। এখন আমরা রয়েলেটি জমাদিয়ে বালু উত্তোলন করায় সে ফেইজবুকে লেখা লেখি করছে। তাই পোষ্টটি ডিলেট করতে বলেছি। এ ছাড়া আমরা সম্পর্কে মামা ভাগিনা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, খনন কাজে পাউবো’র নকশা, পরিমাপ ও বিধিমালা কোনোটিই সঠিকভাবে মানা হচ্ছে না। খালের যে স্থানে বালু পাওয়া যাচ্ছে, সেখান থেকে বালু উত্তোলন করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে কৃষিজমি ,বাড়ির ভিটা, ডুবা,নালা, ভরাট করা হচ্ছে।
বাগমারা মৌজার মো. মাইন উদ্দিন নামের এক ব্যক্তির ১৯২ শতাংশ জমি ৭ টাকা ফুট চুক্তিতে বালু ভরাটের কাজ চলমান রয়েছে।এতে অনেকের কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
বাগমারা গ্রামের মো. দুলাল মিয়া জানান ড্রেজারের কারনে আমার দুই কানি (৬২ শতাংশ) জমি নষ্ট হয়েছে। বিষয়ে ইউএনও স্যারের নিকট অভিযোগ করেছি।কিন্ত কোন ক্ষতিপূরন পাইনি।
ঠিকাদারের লোক মো. হোসেন ও শফিক মেম্বার জানান, কাজটি মো. মিজানুল আলম ( জেবি) এর নামে হলেও ঠিকাদারের নিকট থেকে খাল খননের দ্বায়িত্ব নিয়েছেন পৌর মেয়র । আপনি তাঁর সাথে কথা বলেন।
কুমিল্লা পাউবো’র উপ সহকারি প্রকৌশলী মো. কামাল উদ্দিন জানান,সরকারি কোষাগারে রয়েলেটি জমা দিয়ে ব্যাক্তি মালিকানা জমি ভরাট করার বিধান আছে। কিন্ত প্রতিঘনফুট বালুর জন্য রয়েলেটি কত টাকা জমাদিতে হয় জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন ।
এ বিষয়ে পৌর মেয়র এ্যাডভোকেট মো. নজরুল ইসলাম জানান, খাল খনন কাজটি যাতে সুন্দর ভাবে সম্পন্ন হয় সে জন্য দেখা শুনা করার জন্য এলাকার কয়েকজনকে বলেছি।বালু বিক্রি করতে বলিনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ক্ষেমালিকা চাকমা বলেন, খাল খননের বালু এক জায়গায় স্তপ করে রেখে টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করা হবে। এ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হবে। সিন্ডিকেট করে খাল খননের বালু বিক্রি করার কোন সুযোগ নেই। খাল খননের বালু বিক্রির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।