দৈনিক দর্পণ নিউজ দৈনিক দর্পণ নিউজ 24
Related Articles
হোমনা( কুমিল্লা) প্রতিনিধি
কুমিল্লার হোমনায় দালালের মাধ্যমে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে পরে এ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে গ্রাহকের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের বিরুদ্ধে। ,সরকারের নির্দেশে গ্যাস সংযোগ দেওয়া বন্ধ থাকলেও অফিসের কিছু অসাধু কমর্কর্তার যোগসাজসে বাখরাবাদ গ্যাস কম্পোানি লি: এর ঠিকাদার নামদারী একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে ডিমান্ড নোট সহ সমস্ত অফিসিয়াল প্রক্রিয়ায় গ্যাস সংযোগ দিয়ে বিল বই ও কাগজ পত্র বুঝিয়ে দেন।
গ্রাহকদের অভিযোগ ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে গ্যাস সংযোগ পাওয়ার পর নিয়মিত গ্যাস বিল পরিশোধ করার পর গ্যাস কর্তৃপক্ষ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে এবং গ্রাহকের নামে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। অথচ যারা টাকা নিয়ে গ্যাসের সংযোগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তারা রয়েযাচ্ছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
তাদের দাবী গ্যাস লাইন অবৈধ হলে সংযোগ দিলো কিভাবে এবং ব্যাংকের মাধ্যমে ডিমান্ড নোট ও মাসিক বিল প্রদান করা হয়ে সে টাকা কোথায় গেল? যারা অবৈধভাবে টাকার বিনিময়ে গ্যাস সংযোগ দিল তাদেরকে আইনের আওতায় আনা জরুরী।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের মেসার্স ময়নামতি এসোশিয়েশন গ্যাস কোম্পানী লিঃ এর মোন্তাজ উদ্দিন,মেসার্স সুইটি এন্টার প্রাইজের মো. অলি উল্লাহ তার ভাই,ভাতিজা,শালা সহ প্রতিটি গ্রামে তাদের লোক নিয়োগ করা আছে। তাদের মাধ্যমেই বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে উপজেলার ছয়ফুল্লাহ কান্দি,বাবরকান্দি, মিরাশ, হরিপুর, বাহের খোলা,কারারকান্দি, মধ্যকান্দি,বাগমারা ভবানিপুর,কাচারিকান্দি, বাগমারা গ্রামে গ্যাস সংযোগ দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
পরবর্তীতে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড এসব লাইন অবৈধ ঘোষনা করে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। অনেক গ্রাহক বিল বইয়ের মাধ্যমে গ্যাস বিল জমা দেওয়ার রশিদ থাকা সত্যেও তাদের লাইন বিচ্ছিন্ন করেদেন এবং তাদের নামে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।
এ দিকে ঐ চিহৃত দালাল চক্র পুনরায় গ্যাস সংযোগ এবং মামলা থেকে বাঁচানোর কথা বলে প্রত্যেক গ্রাহকের নিকট থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়েছে। কারারকান্দি ও কাচারীকান্দি গ্রামের গ্রাহকরা টাকা না দেয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা হযেছে। অন্য গ্রামের গ্রাহকের বিরুদ্ধে কোন মামলা হয়নি।বরং অফিসের নাম করে বাগমারা হরিপুর,শ্রীমদ্দি গ্রামে পুনরায় গ্যাস সংযোগ দিয়ে মাসে মাসে বিলবাবদ হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা।
কারারকান্দি গ্রামের গ্রাহক মো. আবু হানিফ চৌধুরী জানান, স্থানীয় গ্যাস ঠিকাদার হবি মিয়া ৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে লাইন দিয়েছে।,আমরা নিয়মিত বিল পরিশোধ করেছি।কিন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালতে লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেন। তবে পুনরায় লাইন সংযোগ দেয়ার জন্য টাকা দাবী করেছিল। এতে রাজি না হওয়ায় আমাকে সহ গ্রামের শতাধিক গ্রাহকদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। প্রতিমাসে কোর্টে হাজিরা দিতে হয়।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কাচরীকান্দি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশারফ হোসেন
জানান ৮০ হাজার টাকা খরচ করে বৈধ ভাবে গ্যাস সংযোগ নিয়েছি। পরবর্তীতে আমার লাইন বিচ্ছিন্ন করেদেয় আমাদের গ্রামের শতাধিক ব্যক্তির নামে মামলা দিয়েছে। মাসে হাজিরা দিচ্ছি। কিন্ত যারা টাকা নিলো তাদের কিছুই হয়নি। যারা এ সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবী জানাচ্ছি।
বাগমারা গ্রামের গ্রাহক মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘৭০ হাজার টাকা নিয়ে বলেছে বৈধ লাইন আমাদের (ডিমান্ড নোট) বিল বই রশিদ সবই আছে। কিন্তু লাইন নাকি অবৈধ! আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। পাশাপাশি যারা বৈধ লাইন বলে অবৈধ লাইন স্থাপন করছেন, তাদের গ্রেফতারসহ বিচার দাবী জানাচ্ছি।
বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ডিজিএম মুঠোফোনে জানান, ২০১৬ সাল থেকে আবাসিক গ্যাস সংযোগ দেয়া বন্ধ রয়েছে। ‘কম্পিউটারে ডাটাবেচ-এ অন্তভুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা এই লাইনকে অফিসিয়ালভাবে বৈধ লাইন বলতে পারি না। এসব লাইনকে অবৈধ লাইন বলি। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে। যদি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির কেউ জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
হোমনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ক্ষেমালিকা চাকমা জানান, মামলা আদালতের বিষয়। তাছাড়া কোন গ্রাহক লিখিত কোন অভিযোগ করেনি। তবু এ নিয়ে জেলা আইন শৃঙ্খলা সভায় আলোচনা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
