দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
কুমিল্লার দেবিদ্বারে ১৬ টি কবরের চিহৃ দেখা গেছে। কবরগুলো কুমিল্লার দেবিদ্বার পৌর সদরের নিউমার্কেট এলাকার মোল্লা বাড়ির পুকুর পাড়ের গোরস্থানের পাশে।একই স্থানে ১৬টি নতুন কবর দেখে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতুহলের শেষ নেই। কবরগুলোতে কাদের দাফন করা হয়েছে এবং কীভাবে মারা গেছেন, জানাজা কোথায় হয়েছে এবং কারা কবর দিয়েছেন জানেন না স্থানীয়রা। আসলে এটি কি কবর? না গায়বী কবর েনিয়ে চলছে সর্বত্র আলোচনা।
গত রবিবার ২৭ আগস্ট স্থানীয় রমিজ মোল্লা নামে এক ব্যক্তি ১৬টি নতুন কবর এবং কবরের ভেতরের মানুষগুলোর পরিচয় নিশ্চিত করতে দেবিদ্বারের ইউএনও’র কাছে লিখিত আবেদন জানান। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইউএনও নিগার সুলতানা উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) আহ্বায়ক, পৌর উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন ও উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ারকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিগার সুলতানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিউ মার্কেটের প্রবীণ ব্যবসায়ী হাজী আব্দুল লতিফ মোল্লা বলেন, ‘আমি প্রায় ৪০ বছর আগে দেবিদ্বার নিউ মার্কেট মোল্লা বাড়ির পুকুর পাড়ে বাঁশঝাড়ের জমি কিনে মার্কেট তৈরি করে ব্যবসা করছি। আমার মার্কেটের পাশে হঠাৎ এতগুলো নতুন কবর দেখে শঙ্কিত হয়ে পড়ি। কারা মারা গেলেন, কারা কবর দিলেন,জানাজা কোথায় হলো, মৃত্যু কিভাবে হলো এ বিষয়ে মাইকিং বা কোন সংবাদও পাইনি। এই গায়েবী কবর কোথা থেকে আসলো তা আমরা বলতে পরছি না।
এদিকে রমিজ উদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘আমার পূর্ব পুরুষদের কবরস্থানটি যৌথ মালিকানাধীন সম্পত্তি। গোরস্থানের পাশে আমার প্রায় দুই শতাংশ জমি রয়েছে। ওই জমি আর এস, সিএস-এ পুকুরপাড় উল্লেখ রয়েছে। তাছাড়া আগে এখানে কোনও কবর ছিল না। এরই মধ্যে কে বা কারা আমার জমির সীমানা প্রাচীর ভেঙে ওই জমিতে সারিবদ্ধভাবে ১৬টি নতুন কবর তৈরি করে রেখেছে।’তা আমার জানা নেই
তিনি আরো বলেন, ‘আমার বয়স ৬৫ বছর। গোরস্তানের বাইরে আমার জমিতে কাউকে কবর দিতে দেখিনি। বাড়ির মুরুব্বিরাও দেখেননি। নতুন কবর এবং কবরের ভেতরের মানুষ গুলোর পরিচয় নিশ্চিত করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছি।’
এ বিষয়ে মোল্লা বাড়ির নজরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘১৮ শতাংশ জমির ওপর এ গোরস্তান ২০০ বছরের পুরোনো। এখানে নতুন কোনও কবর নেই, আমার দাদা-দাদি, বড় বাবা-বড় মা, চাচা-চাচি, জেঠা-জেঠিসহ স্বজন ও বাড়ির লোকজনের কবর রয়েছে। আমরা পূর্বপুরুষ ও নারীদের কবরগুলো মাটি দিয়ে উঁচু করে রেখেছি মাত্র। নতুন কবর গুলি রহস্যময়।
এদিকে ঘটনার পর একাধিকবারদেবিদ্বার থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ কবরের রহস্য উদঘাটনে ইউএনও স্যার তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।’ আশা করছি দ্রুত এর সঠিক রহস্য উদঘাটিত হবে।
দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) নিগার সুলতানা বলেন, ‘বিষয়টা স্পর্শকাতর, তাই অ্যাসিল্যান্ডকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছি। কমিটিকে দ্রুত তদন্তের রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই কবরেরর রহস্য নিশ্চিত হওয়া যাবে।’