বিশেষ প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার হোমনা ও তিতাস উপজেলা বিএনপির ১০ জানুয়ারীর রেজুলেশনের প্রতিবাদ করেছেন সাবেক প্রধান মন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক এপিএস-২, জন প্রশাসন মন্ত্রনালয়ের উপসচিব ইঞ্জিনিয়ার আবদুল মতিন খান।
আজ সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারী) সকাল ১১ টার দিকে কুমিল্লার তিতাসের মাছিমপুর গ্রামের তাঁর বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি এর প্রতিবাদ করেন।
হোমনা – তিতাস উপজেলার কর্মরত সাংবাদিকদের সামনে লিখিত বক্তব্যে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগকে শতভাগ মিথ্যা,বানোয়াট,উদ্দেশ্য প্রনোদিত বলে আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, গত ১০ জানুয়ারী হোমনা ও তিতাস উপজেলা বিএনপি আমার বিরুদ্ধে দলীয় প্যাড ব্যবহার করে কিছু কাল্পনিক অভিযোগ এনে রেজুলেশন করেছেন। আমি দফা ওয়ারী এর জবাব দিতে চাই।
তিতাস উপজেলার কলাকান্দি ইউনিয়নে দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে গিয়ে আওয়ামীলীগের প্রার্থীকে সহযোগীতার অভিযোগ আনা হয়েছে। এ অভিযোগ সম্পুর্ন মিথ্যা। অথচ তৎকালীন বিএনপি নেতা মরহুম এম কে আনোয়ার ও আমি চেয়ারম্যান জবেদ আলীকে সমর্থন করেছিলাম এবং চেয়ারম্যন নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এ ছাড়া ২০১৬ সালে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী কামাল চেয়ারম্যান হত্যা মামলায় প্রতিহিংসামূলক আমাকে আসামী করা হয়েছিল।পরবর্তীতে মামলার আইও তদন্ত শেষে মামলার চার্জসীট থেকে আমাককে সহ ১০/১২ জনকে বাদ দিয়ে চার্জসীট দাখিল করেন। মামলার বাদী নিহতের স্ত্রী কোন নারাজি দেন নি বরং চার্জসীর্টের বিরুদ্ধে কোন আপত্তি নেই বলে আদালতকে জানিয়েছেন।
রেজুলেশনে অভিযোগ করেছেন ১/১১ সময় মঈন উদ্দিন- ফখরুদ্দিন সরকারের সাথে আতাত করার কারনে নাকি আমার বিরুদ্ধে কোন মামলা হয়নি। এ অভিযোগটিও সঠিক নয়। প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয়ের ২২২ জন স্টাফের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং দুদক ও এনবিআর অনেক অনুসন্ধান করে আমার জ্ঞতআয় বহিঃভুত কোন সম্পদ না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছেন। বেগম খালেদা জিয়া যেমন সৎ ছিলেন আমিও তেমন সৎ আছি এবং থাকবো ইন্সা আল্লাহ।
আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আমি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও দেশ নায়ক তারেক রহমানের ছবি দিয়ে ইংরেজী নববর্ষের শুভেচ্ছা জানোর কারনে নাকি দলের নেতাকর্মীদেরকে অপমান করেছি। দীর্ঘ ৫ বছর তাঁর এপিএস-২ হিসাবে চাকুরি করার সুবাদে আমি এ পরিবারের একজন এক্সটেন্ডেড অংশের সদস্য হয়ে গেছি,তা ছাড়া আমি ছাত্রজীবন থেকেই জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী, আমি বিএনপির একজন কর্মী বা সমর্থক হিসাবে নববর্ষের শুভেচ্ছা ফেস্টুন দেয়ায় কি ভাবে নেতাকর্মীদের অপমান করা হলো তা আমার জানা নেই।
আমি দুর্নীতিবাজ নই। প্রধান মন্ত্রীর দপ্তরে ৫ বছর সততার সাথে চাকুরি করেছি। চাকুরি কালীন সময় অনেক বেকার যুবকের চাকুরির জন্য সুপারিশ করেছিলাম। এর বিনিময়ে এক কাপ চা পর্যন্ত পান করিনি। তা ছাড়া একজন ব্যক্তি সৎ না দুর্নীতিবাজ তা প্রমান করবে দুদক/এনবিআর/ আদালত। আমি দুর্নীতিবাজ হলে বেগম খালেদা জিয়ার মত একজন প্রজ্ঞাময়ী রমনী আমাকে তাঁর এপিএস হিসাবে রাখতেন? । কোন প্রমান ছাড়া আমাকে দুর্নীতিবাজ আখ্যা দিয়ে রেজুলেশন করার অর্থ দলের সুবিধাভোগী কিছু নেতার চরিত্র দিয়ে আমাকে বিচার করে সঠিক করেন নি, পাশা পাশি বেগম খালেদা জিয়ার আস্থার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গলী প্রদর্শনের সামিল বলে আমি মনে করি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এপিএস-২ ইঞ্জিনিয়ার আবদুল মতিন খান বলেন, আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস করি,আমি বিএনপির একজন কর্মী হিসাবে এলাকার সেবক হিসাবে কাজ করতে চাই। আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে এ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাইব। মনোনয়ন না পাইলে যে মনোনয়ন পাবে আমি তার পক্ষেই কাজ করবো।
তিনি বলেন, এ আসনের সর্বজন শ্রদ্ধেয় সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মরহুম এম কে আনোয়ার স্যারের ইচ্ছা তাঁর অবর্তমানে যাতে আমি দলের হাল ধরি। তার ছেলে মাহমুদ আনোয়ার কাইজার সাহেবের সামনে মরহুম এমকে আনোয়ার স্যার এ কথা বলেছেন। তাই এলাকার উন্নয়নের সার্থে বিএনপির কর্মী হিসাবে কাজ করার ঘোষনা দিয়েছি । তারই অংশ হিসাবে জনগনকে ইংরেজী নববর্ষের শুভেচ্ছা ফেস্টুন দিয়েছিলাম।
সংবাদ সম্মেলনে মতিন খান আরো বলেন, দেশের এ ক্লান্তি লগ্নে নেতাকর্মীদেরকে সুসংঘটিত করে দলকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন। এ সময় এ ধরনের কাল্পনিক অভিযোগ করা উদ্দেশ্যপ্রনোদিত, দলের শক্তিবৃদ্ধি হউক তারা তা চায় না। এ বিষয়ে দলের নেতাকর্মী সতর্ক সোচ্ছার হওয়া হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। তবে উপজেলা বিএনপির দায়িত্ব প্রাপ্ত কোন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে আমার কোন অভিযোগ নাই। কারন আমি জানি কার ইশারায়,কেন আমার বিরুদ্ধে এমন কাল্পনিক অভিযোগ আনা হয়েছে। আমি সৎ না দুর্নীতিবাদ হোমনা ও তিতাস উপজেলাবাসি খুব ভাল করেই জানে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, দলের কেন্দ্রিয় সব কর্মসূচিতে আমি অংশ গ্রহন করি। এলাকার বিভিন্ন কর্মসুচিতে অংশগ্রহন করবো, আমাকে দায়িত্ব দেয়া হলে দলের আভ্যন্তরীন কোন্দল নিরসনেও কাজ করে যাবো।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক ছাড়াও হোমনা এবং তিতাস উপজেলার শতাধিক বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।